দেবযানীর লকডাউনের দিন
লকডাউনে বিরাট সংখ্যক মানুষ হারিয়েছে কাজ। স্বনির্ভর প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মহিলা দলগুলির অবস্থাও ভালো নয়। তৈরি কাজ নিয়ে ঘরে বসে দিন কাটাচ্ছে অনেকেই। এর মধ্যেই বাজিমাত করেছে দেবযানী।পাঁচ হাজারের বেশি মাস্ক বিক্রী একরকম রেকর্ড বলা যেতে পারে। আর এই অসাধ্য সাধনের কাজটি করেছে কান্দির দেবযানী ধর। মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত মাস্ক বিক্রি পেরিয়েছে পাঁচ হাজার। কাজ চালাতে সঙ্গে নিয়েছে আরও চারজন মহিলাকে। প্রিন্ট, ম্যাচিং, এক কালার,টু লেয়ার থেকে ফোর লেয়ার মাস্ক তৈরি। নানা রঙ ও ডিজাইনের বাহারি মাস্ক দেবযানী বানিয়েই চলেছে।
স্বামীর ব্যবসা হঠাৎ মন্দা। কি করবে ঘরের বৌ? নিশ্চিতভাবেই সংসারের হাল ধরবে। খুঁজবে হন্যে হয়ে একটি কাজ। দেবযানী শিক্ষিত। গ্র্যাজুয়েট। বিবাহ পরবর্তী জীবনে শুরু হয় অন্য লড়াই। স্বামীর প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সোনার দোকান চালু রাখার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় দেবযানী। তারপর চৌকাঠ পেরোনোর পালা আসে! সন্ধান চালাতে থাকে দিনরাত কাজের। অনেক কষ্টে জোগাড় হয় কাজ। তাও আবার মাসে দেড় হাজার। দুই ছেলে -মেয়ে নিয়ে বিরাট সংগ্রাম। তারপরে কাজের চাপে অসুস্থ হয় দেবযানী। আসে কোভিড ও লকডাউন। স্থানীয় বিডিওর পরামর্শেই মাস্ক বানানো শুরু করে দেবযানী। এখন চারজন মেয়ে কাজ করছে দেবযানীর কাছে। তিরিশ টাকা থেকে আশি টাকা পর্যন্ত দাম দেবযানীর মাস্কের।
মাস্কের সঙ্গে দেবযানীরা দিচ্ছে সুন্দর প্যাকেট। সেখানে নিজের নাম ও ফোন নাম্বার দেওয়া। এভাবেই দেবযানী খুঁজে পেতে থাকে ব্যক্তিগত ক্রেতা। বাড়তে থাকে ব্যবসার পরধি। যেমন ডিজাইন ও কালারের মাস্ক চাই তেমনটাই অর্ডার নিয়ে বানিয়ে দিচ্ছে দেবযানী।
লকডাউন আশীর্বাদ হয়ে নেমে আসে দেবযানীর জীবনে। বন্ধ সংসারের চাকায় নতুন করে গতি ফিরে এসেছে। বাঁচছে আরও চারটি পরিবার!মেয়েদের উপার্জনে পরিবারের মুখে ফুটছে হাসি! নেমে আসছে স্বস্তি।
গোকর্ণ,কান্দি,মুর্শিদাবাদ