ব্যাগ নির্মাতা ডলি রায়ের লকডাউন যাপন
ভাইরাস মুক্ত পৃথিবী নাগালে এসে যাবে! হয়ত অপেক্ষা আরও কিছুদিন। এক কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছে মহিলা উদ্যোক্তারা। প্রায় যুদ্ধকালীন অবস্থার মোকাবিলায় নেমেছেন তারা। এন্ট্রেপ্রেনার দের সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলি ধুঁকছে!৩৫ বছরের সমৃদ্ধ ব্যাগ প্রতিষ্ঠান ডলি ও দিলীপ রায়ের। দীর্ঘ নয় মাস ধরে কোনো অর্ডার নেই। কতদিন এভাবে চলবে কেউ জানেনা! মুখ ধুবড়ে পড়েছে পরিকাঠামো। মনোবল হারিয়েছে ডলির মেয়েরা।
বিয়ের পরেই স্বামীর সংস্থা সামলানোর দায়িত্ব এসে পড়ে ডলির উপর। একশোর বেশি মেয়েকে নিয়ে চলতে থাকে কাঁথা স্টিচের ব্যাগের কাজ। ভারতের সর্বত্র এই ব্যাগের চালান ছিল রমরমিয়ে। এখন প্রতিদিন মেয়েরা কাজ শুরু কবে জিজ্ঞাসায় কড়া নাড়ছে। ডলিও মানসিক ভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। উত্তর নেই কোনো কবে থেকে আসলে কাজ শুরু!
ঘরের প্রোডাক্ট বন্ধ অবস্থায় পড়ে। ডলিদির স্বামী একদা নিজের প্রোডাকশনের দেশব্যাপী মার্কেটিং করেছেন। তিনিও কিছুটা ক্লান্ত! অসহায় জিজ্ঞাসা কবে ঠিক হতে পারে অবস্থা! অর্ডার আবার কবে আসতে শুরু করবে! ডলিদিও কার্যত হতাশ। ডলিদি জানায় ২০০০ সালে বন্যার সময় বস্তা বস্তা সিল্কের কাপড় ফেলতে হয়েছিল তবুও এমন পরিস্থিতি হয়নি। লকডাউন একেবারে উদ্যোক্তাদের মেরুদন্ডে আঘাত। উঠে দাঁড়ানো দিনের পর দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
রীতিমতো সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ীরাও মুখ আড়াল করছেন। সংকট এতটাই তীব্র। ডলিদির ব্যাগ অসাধারণ। খুব আকর্ষনীয়। মেয়েদের পরিশ্রম ও মনোযোগের স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। ডলিদির কাছে প্রাথমিক কাজ শেষ করার পর তা স্বামীর কারখানায় পৌছায়। সেখানেও মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। ডলিদি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন,"কটেজ ইন্ডাস্ট্রি দেশের বড় ভবিষ্যৎ। মহিলা উদ্যোক্তা দের জন্য আলাদা করে ভাবনার দরকার আছে তো!"এটাও সত্য ন্যাচারাল কালামিটি বা অন্যান্য দূর্যোগ পরিস্থিতিতে মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা স্কিম থাকা দরকার। ফান্ড ড্রাই এর মোকাবিলায় সরকার হাত না বাড়ালে মেয়েরা কোথায় দাঁড়াবে! সরকারি লোনের ক্ষেত্রেও তো সাড়ে বারো শতাংশ ইন্টারেস্ট প্রাথমিকভাবে গুনতে হয় মেয়েদের। ডলিদির কথার প্রতিফলন সরাসরি মেলে বাস্তব পরিস্থিতিতে। মহিলা-প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপস বা কোফাউন্ডার মহিলাদের স্টার্টআপসের পরিমাণ ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের মোট বিনিয়োগের ৬ শতাংশেরও কম।
"vocal for local" সাপোর্ট করতে গেলেও ক্রয়ক্ষমতা চাই! কোভিডের কারণে ক্রেতাদের পছন্দ এখন এসেন্সিয়াল ও নন এসেন্সিয়াল দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। গ্লোবালি ৯৩% ক্রেতা মনে করছে ব্রান্ডের নন এসেন্সিয়াল স্টোর বন্ধ করা দরকার। ইতালী, স্পেনে তা অলরেডি হয়েছে। ডলিদিদের সমস্যা দিন দিন জটিল হচ্ছে। লাক্সারি গুডসের চাহিদা না থাকলে উৎপাদন কি করে হবে? উৎপাদন না হলে জুড়ে থাকা মহিলা কর্মীদের ঘর কী করে চলবে?
kandi,berhampore
No comments:
Post a Comment