Sunday 8 November 2020

জুট শিল্পী লায়লার লকডাউন যাপন

 আর্টিজান লায়লার লকডাউনের দিন

প্রথম ইন্ডো আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট মন খুশি করে দিয়েছে আমাদের। কমলা দেবি হারিস মেয়েদের আকাশে আর এক নতুন নক্ষত্র। কিন্তু এদিকে সূর্যাস্তের রঙে অনিশ্চয়তার সুর। আগামীর অন্ধকার সকালের মুখোমুখি আমাদের মেয়ে লায়লারা। বাক্সবন্দি হাতে বানানো জিনিষের ভিড়। বিক্রী নেই। মেলা নেই। কাজ করা কারিগর মেয়েদের হাতে পয়সা নেই। এদের সাহায্য নয়,শ্রমের মূল্য চাই। প্রোডাক্টের চাহিদা আছে। বাজারটাই শুধু টানা বন্ধ! তাও আট মাস ধরে চলছে বেঁচে থাকার লড়াই। লায়লার ২০ বছরের হাতের কাজের অভিজ্ঞতা। কাজ বন্ধ করলে মেয়েদের কি হবে! তাই দশজন মেয়ে করে যাচ্ছে কাজ।

লায়লা নিজে মাধ্যমিক পাশ। কিছুটা হলেও বুঝেছে কোভিডের ক্ষমতা! তারপর থেমে থাকেলে তো চলবে না! লায়লা গত বছর পুজোয় ৯০ হাজার টাকার ম্যাটের অর্ডার পেয়েছিল কলকাতায়। তারপর ছিল বিভিন্ন মেলা। তার আগেও পেয়েছিল ওয়াল টু ওয়াল কার্পেটের অর্ডার। প্রায় ৮০ হাজার টাকার। এবারে হাত শূন্য। জুটের রকমারী সম্ভার ঘরবন্দী।

লকডাউনে অনলাইন বিজনেস বুম হলেও প্রযুক্তিবিদ্যাবিহীন মেয়েরা পড়েছে বিপদে।স্মার্টফোন নেই হাতে। অনেকে আবার নিজের না থাকলেও ছেলেকে কিনে দিতে বাধ্য হয়েছে। আবার যাদের আছে তারাও খুব বেশি পারদর্শী নয়। তাই প্রান্তিক মেয়েদের ক্ষমতা নেই মোবাইল ব্যবহার করে ঘরবন্দী জিনিষের বিজ্ঞাপণ দেওয়া। এবং সেটা বিক্রীর ব্যবস্থা করা। আবার কাজে যুক্ত থাকা মেয়েদের বিপদ বেড়েছে। ট্রেন বন্ধ তাই স্বামীরাও কাজে যেতে পারেনি। প্লেনের ভাড়া দশ হাজারের বেশি। সেটা জোগাড় গ্রামের শ্রমিকদের প্রায় অসম্ভব। ছেলেমেয়ের পড়া বন্ধ। অনলাইন ক্লাস করার জন্য মোবাইলও নেই। এদিকে বিক্রী নেই তাই লায়লা এদের দিয়ে বেশি কাজ করাতেও পারছেনা। পরিবার গুলি ভুগছে। তবু এরা কেউ বসে নেই। কাজ করছে। মজুরি কম মিলছে। কেননা কাজ কম। লায়লার জিনিষ বিক্রী নেই। মেলা নেই। খুচরো বিক্রীও নেই।অর্ডার ও নেই। তবুও লায়লারা বাঁচিয়ে রেখেছে কারিগরদের ঘর। মেয়েদের সংসার। এদের শ্রমের মর্যাদা এদের উপার্জনের ন্যায্য পয়সা। তা দিয়ে চলে ঘর। লায়লারা হার মানেনি। মেয়েরাও নয়।


উদাহেরামপুর,ইসলামপুর,মুর্শিদাবাদ


No comments:

Post a Comment

কাথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউনের দিন

  কাঁথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউন যাপন    মেয়েদের সুন্দর মুখের নয়, সুন্দর কাজের জয়  সর্বত্র। সাফল্যের সীমানা দিগন্তপার। তাইতো সোনালীদের এত ...