Sunday, 3 May 2020

সেলাই কর্মী টায়রার লকডাউন যাপন

ইনফরমাল সেক্টর ও অসংগঠিত লেবারদের অবস্থা সারা বিশ্বে সংকটজনক। ৪০০ মিলিয়ন কর্মী ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ্প্রায় ৬০ শতাংশ মহিলা অসংগঠিত লেবার । হঠাৎ লকডাউনে বহু ট্রেনিং সেন্টারের বন্ধ হয়েছে ফান্ড। আটকে গেছে প্রোজেক্ট। পরিচালনার দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা টাকাও পায়নি! এমন এক অবস্থার শিকার টায়রা খাতুন! প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে  প্রাপ্য টাকা মেলেনি। আবার ট্রেনিং সেন্টারও বন্ধ।বাড়িতে এক দম আটকানো  পরিবেশ।

টায়রার বোনের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরৎ এসেছে বোন। গায়ের রঙ কালো। ওরা ভালো বৌ নেবে। লকডাউনের মধ্যেই সালিসি হওয়ার কথা! টায়রা নিজের উপার্জনের পয়সা দিয়ে দিয়েছিল বিয়ে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ওদের আরও টাকা চায়। সেই অজুহাতেই উঠে এল- বৌ দেখতে ভালো নয়!স্বামী লেবার ও  অশিক্ষিত। তাই স্বামীর বাবা-মাই স্বামীর মন-মর্জির নিয়ন্ত্রক।


এদিকে টায়রা নিরুপায় হয়ে  ঘরে বসে সেলাই এর কাজ শুরু করেছে। অর্ডার খুব সামান্যই মিলছে! শহরে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কাজটাও বন্ধ। লকডাউন কবে উঠবে তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে টায়রা। সংসার কোনভাবেই চলছে না। নতুন করে একটা ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়েছিল টায়রা। সেটাও আপাতত লকডাউনে  বন্ধ। সেলাই এর কাজ চললেও ডিলিভারি নেওয়ার লোক নেই। হাতে নেই পয়সা! পরিবারের চারজন মানুষ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব টায়রার পক্ষে। সেই মেয়েরা যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম, লকডাউন তাদের বিপদের মুখে ফেলেছে! একদিকে বাড়ি ছেড়ে বাইরে আসার উপায় নেই। অন্যদিকে ঘরে বসে উপার্জনের পথ নেই। রেশন থেকে পর্যাপ্ত চাল মিললেও থাকে নানা খরচ। সেগুলির জন্য  হাতে ক্যাশ পয়সা  প্রয়োজন। এই পরিস্থতিতে লড়াই করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এখন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলার অপেক্ষা! কাজ চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাসের অপেক্ষা।

হরিহরপাড়া,মুর্শিদাবাদ

        

No comments:

Post a Comment

কাথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউনের দিন

  কাঁথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউন যাপন    মেয়েদের সুন্দর মুখের নয়, সুন্দর কাজের জয়  সর্বত্র। সাফল্যের সীমানা দিগন্তপার। তাইতো সোনালীদের এত ...