রেনুকার লকডাউনের দিন
গ্রুপের নাম ভরসা হলেও রেনুকা ৪৫ টি পরিবারের ভরসা হয়ে উঠতে পারল না। দীর্ঘ লকডাউন কোমর ভেঙ্গে দিল রেনুকার। ঘরভর্তি জুটের ম্যাট,তারের ব্যাগ ও দেওয়াল সজ্জার জিনিষ নিয়ে হস্তশিল্পী রেনুকা একেবারে অসহায়। মেলা বাতিল। বিক্রী বন্ধ। প্রতি বছর দমদম,বারাসত থেকে অর্ডার আসে ম্যাটের। তারপর বাসে করে প্রোডাক্ট দিয়ে পাঠায় রেনুকা। এবারে সেটাও হয়নি। রেনুকার নিজের দলের বারোজন মেয়ের বাইরে আছে প্রায় তেত্রিশ জন। সকলেই হাত গুটিয়ে বসে আছে। এদের অনেকের পরিবারে নিজেদের উপার্জন ছাড়া অন্য কোনও আর্থিক সংস্থান নেই। রেনুকার পরিবারে স্বামীর উপার্জন লকডাউনের পর চালু হওয়ায় কোনওভাবে সংসার চলছে। কিন্তু নিজের সঙ্গে জুড়ে থাকা মেয়েদের সাহস জোগাতে পারছেনা রেনুকা।লকডাউনের অর্তকিতে হানা। বানানো জিনিষের চাহিদা নেই। এদিকে মেয়েদের কাজ বন্ধ থাকায় হতাশা ও কষ্ট বেড়েই চলেছে।
মূল সমস্যা হচ্ছে রেনুকাদের মেইনস্ট্রিম মার্কেটের সঙ্গে যোগাযোগ খুব বেশি গড়ে উঠছে না। লার্জ স্কেল এন্টারপ্রাইজ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও বেশি দূর এগিয়ে নেই ওরা।যদিও ভারতে পঞ্চাশ মিলিয়ন মহিলারা সেল্ফ হেল্প মুভমেন্টের অংশীদার।রেনুকারা আর্টিজান কিন্তু ফ্যাশন ডিজাইনার ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে এরা গাঁটছড়া বাঁধতে পারেনি।
মেলার অপেক্ষায় দিন কাটে। তার মূল কারণ এরা কেউ টেকনোলজি ফ্রেন্ডলি নয়। ইনফরমেশন ও নেই এদের কাছে। নিজের কাজ বিশ্বের দরবারে বাইরের উদ্যোগ ও সাহায্য ছাড়া কিছুতেই নিয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই। বিপদের সময় মানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয়ে এরা পুরোপুরি বিধ্বস্ত। নিজের দলকে বা মেয়েদের বাঁচানোর সাধ্য প্রায় নেই বললেই চলে! গ্রুপ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে। তবুও আশায় দিন গুনছে রেনুকা।
No comments:
Post a Comment