Friday, 8 May 2020

সেলাই স্কুলের দিদিমনি চেনবানুর লাকডাউন যাপন

 চেনবানুর লকডাউনের দিন

দারিদ্র মেয়েদের কাজের মুখে ঠেলে দেয়। নিজের ভাত জোটাতে কাজে হাত লাগাতে হয়। চতুর্থ শ্রেণি পড়া চেনবানুকে বিড়ির কুলা থেকে তুলে এনেছিলেন উদ্যমী দুই মহিলা। অভাবের সংসারে পড়া বন্ধ হওয়ার আগেউ চেনবানুর কপাল খুলেছিল। ধীরে ধীরে চেবনাবু মাধ্যমিক পাশ করে। তার আগে থেকেই চলতে থাকে সেলাই ট্রেনিং। চেনবানুর স্বপ্ন ছিল সেলাই স্কুল খুলে মেয়েদের সাহায্য করা। সেই লক্ষ্যপূরণে সাহায্য মিলে যায় চেনবানুর। মেয়েদের উলের ও অন্যান্য কাজে চেনবানু খুঁজে পায় জীবনের নতুন মানে। এদিকে পড়াও জারি থাকে। আসে অন্য অধ্যায়। বিয়ের পর চেনবানুর জীবনে দ্বিতীয় অধায় আসে। রাজনীতিতে যুক্ত হয় চেনবানু। পাঁচ বছরের জন্য এলাকার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়। তখন বাড়িতেই চালাতে থাকে সেলাই স্কুল। 

রাজনীতির পাট চুকিয়ে আবার ফিরে আসা নিজের কাজে। সেলাই স্কুল ও নিজের বাড়ী মিলে ১৩০ জন ছাত্রী চেনবানুর। নিজের জীবনের ফেলে আসা অতীত থেকে দরিদ্র মেয়েদের খুঁজে পেতে তাদের সেলাই শেখাতে থাকে চেনবানু। এবারে বাধ সাধে লকডাউন। দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকে সেলাই স্কুল। মেয়েরা কিছুতেই লকডাউনে সাহস করে স্কুলে আসে না। স্যানিটাইজার ও মাস্ক দিয়েও উৎসাহ ফেরে না মেয়েদের। প্রাথমিকভাবে ৩জন আসতে রাজি হলেও দুদিন পরে  তারা বন্ধ করে দেয়।

কুড়ি বছরের মধ্যে এমন অভিজ্ঞতা হয়নি চেনবানুর। মেয়েদের কাজ শেখা মানেই তার উপার্জনের পথ তৈরি করা। আর উপার্জন মানেই একটি পরিবারে বোঝা হওয়া থেকে রেহাই পাওয়া। অর্থাৎ বিয়েটা আটকানোর জন্য নিজেকে উপযুক্ত করা। চেনবানু সেই ভাবনা থেকেই আতঙ্কিত। এত সময় ধরে লকডাউন স্কুলের  মেয়েদের হতাশ করেছে। আবার কয়েকজনের বিয়েও হয়ে গেছে। 

চেনবানু অপেক্ষায়। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়! 



No comments:

Post a Comment

কাথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউনের দিন

  কাঁথাষ্টিচ শিল্পী সোনালির লকডাউন যাপন    মেয়েদের সুন্দর মুখের নয়, সুন্দর কাজের জয়  সর্বত্র। সাফল্যের সীমানা দিগন্তপার। তাইতো সোনালীদের এত ...