রিম্পার লকডাউন যাপন
অভিবাসী শ্রমিক রিম্পা লুধিয়ানা থেকে গ্রামে ফিরে বাচ্চাদের কাছে পৌঁছাতে পারল না। ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টাইন। ইদেও বাচ্চাদের একটিবার ছুঁয়েও দেখা হল না। বছরের শুরুতে গিয়েছিল কাজে পাঞ্জাবে। কারখানায় প্যাকেটিং এর কাজ করত। সংসারের অভাব দূর করতে নিজের দুই বাচ্চাকে মায়ের হাতে তুলে দিয়ে পাড়ি দিয়েছিল পাঞ্জাব। মাত্র নয় ও দশ বছরের বাচ্চা দুটোকে গ্রামেই ফেলে যেতে
হয়েছিল পয়সার খোঁজে।
নবম শ্রেনি পাশ রিম্পার বিয়ে হয়ে যায় কম বয়সে। রিম্পার আব্বা দিনমজুর। মেয়ের পড়াশুনা টানার চেয়ে সংসারে থালা কমানো জরুরি ছিল। রিম্পাকে তাই নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয় বিয়ে করে। কিন্তু অভাব পিছু ছাড়ে না। স্বামীর ঘর করতে গিয়েও সেই অভাবের সঙ্গে লড়াই জারি থাকে। ছেলেরা একটু বড় হতেই রিম্পা বুঝে যায় এভাবে চলবে না। কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে। গ্রামে পয়সা উপার্জনের কোনোও রাস্তা সে খুঁজে পায়না। অবশেষে বিদেশে শ্রমিকের কাজে যোগদানের কথা ভাবে। গ্রামের অনান্য অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে দল বাঁধে।
লুধিয়ানায় দুই হাজার টাকা দিয়ে ঘর ভাড়া নেয়৷ লকডাউনের সময় ফিরতে চাইলে পুরো বাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিতে বলে মালিক। রিম্পাদের কাছে টাকা না থাকায় তাদের ঘরটাও রেখে আসতে হয়েছে। এখন এদের অবস্থা জলে কুমির ডাঙায় বাঘ এর মত। গ্রামে কাজ নেই। যেখানে কাজ সেখানে ফেরার কি উপায় জানা নেই। ফেরার পর কাজটা ফিরে পাবে কিনা জানেনা।
মাত্র ২০০ টাকার মজুরীতে কাজ করে রিম্পা। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে অদক্ষ শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরীর স্ল্যাব অনুযায়ী শিল্প শ্রমিক পাবে ৫২৩টাকা - ৪৩৭টাকা -৩৫০ টাকা। কিন্তু বাধ্যতামূলক ন্যাশন্যাল ওয়েজ ফ্লোরের পথ না ধরায় আঞ্চলিক বৈষম্য থেকে গেছে। রিম্পারা তারই শিকার। অন্যদিকে মজুরীরতে লিঙ্গ বৈষম্যের দিক তো প্রবল ভাবে আছে। যে কাজে রিম্পা দুশো টাকা সেই কাজেই একজন পুরুষ পাচ্ছে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকা। রিম্পার স্বামীও দিনমজুর। তার কাজের দিনে আয় হয় পাঁচশো। আসলে ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণের জন্য আই এল ও থেকে পাওয়া গাইডলাইন মানা হয় না। কর্মাচারী ও উদ্যোগপতিদের মধ্যে বৈধ প্রয়োজনের ভিত্তিতেই সমতা আনা সম্ভব। সেই নিরিখে কালেক্টিভ বারগেইনিং বা সামাজিক কথোপকথন হয় না বললেই চলে। উদ্যোগপতিদের সুবিধা বেশি করে দেখা হয়।
2018 এর আই এল ও এর প্রতিবেদনে ভারত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২২ টি দেশের মধ্যে বেতন সন্তুষ্টিতে তলার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং মঙ্গোলিয়ার উপরে।
লকডাউনের সময় মজুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে রিম্পাদের বাড়তি সুবিধা নেই। আগাম টাকা দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও নেই। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের ও পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে কাজের দরকার সেটাও হাতে নেই। অভাবে দুচোখ অন্ধকার দেখা ছাড়া আর হাহাকার করা ছাড়া রিম্পাদের কিচ্ছু করার নেই।
গোবড়গাড়া,হরিহরপাড়া,মুর্শিদাবাদ
অভিবাসী শ্রমিক রিম্পা লুধিয়ানা থেকে গ্রামে ফিরে বাচ্চাদের কাছে পৌঁছাতে পারল না। ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টাইন। ইদেও বাচ্চাদের একটিবার ছুঁয়েও দেখা হল না। বছরের শুরুতে গিয়েছিল কাজে পাঞ্জাবে। কারখানায় প্যাকেটিং এর কাজ করত। সংসারের অভাব দূর করতে নিজের দুই বাচ্চাকে মায়ের হাতে তুলে দিয়ে পাড়ি দিয়েছিল পাঞ্জাব। মাত্র নয় ও দশ বছরের বাচ্চা দুটোকে গ্রামেই ফেলে যেতে
হয়েছিল পয়সার খোঁজে।
নবম শ্রেনি পাশ রিম্পার বিয়ে হয়ে যায় কম বয়সে। রিম্পার আব্বা দিনমজুর। মেয়ের পড়াশুনা টানার চেয়ে সংসারে থালা কমানো জরুরি ছিল। রিম্পাকে তাই নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয় বিয়ে করে। কিন্তু অভাব পিছু ছাড়ে না। স্বামীর ঘর করতে গিয়েও সেই অভাবের সঙ্গে লড়াই জারি থাকে। ছেলেরা একটু বড় হতেই রিম্পা বুঝে যায় এভাবে চলবে না। কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে। গ্রামে পয়সা উপার্জনের কোনোও রাস্তা সে খুঁজে পায়না। অবশেষে বিদেশে শ্রমিকের কাজে যোগদানের কথা ভাবে। গ্রামের অনান্য অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে দল বাঁধে।
লুধিয়ানায় দুই হাজার টাকা দিয়ে ঘর ভাড়া নেয়৷ লকডাউনের সময় ফিরতে চাইলে পুরো বাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিতে বলে মালিক। রিম্পাদের কাছে টাকা না থাকায় তাদের ঘরটাও রেখে আসতে হয়েছে। এখন এদের অবস্থা জলে কুমির ডাঙায় বাঘ এর মত। গ্রামে কাজ নেই। যেখানে কাজ সেখানে ফেরার কি উপায় জানা নেই। ফেরার পর কাজটা ফিরে পাবে কিনা জানেনা।
মাত্র ২০০ টাকার মজুরীতে কাজ করে রিম্পা। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে অদক্ষ শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরীর স্ল্যাব অনুযায়ী শিল্প শ্রমিক পাবে ৫২৩টাকা - ৪৩৭টাকা -৩৫০ টাকা। কিন্তু বাধ্যতামূলক ন্যাশন্যাল ওয়েজ ফ্লোরের পথ না ধরায় আঞ্চলিক বৈষম্য থেকে গেছে। রিম্পারা তারই শিকার। অন্যদিকে মজুরীরতে লিঙ্গ বৈষম্যের দিক তো প্রবল ভাবে আছে। যে কাজে রিম্পা দুশো টাকা সেই কাজেই একজন পুরুষ পাচ্ছে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকা। রিম্পার স্বামীও দিনমজুর। তার কাজের দিনে আয় হয় পাঁচশো। আসলে ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণের জন্য আই এল ও থেকে পাওয়া গাইডলাইন মানা হয় না। কর্মাচারী ও উদ্যোগপতিদের মধ্যে বৈধ প্রয়োজনের ভিত্তিতেই সমতা আনা সম্ভব। সেই নিরিখে কালেক্টিভ বারগেইনিং বা সামাজিক কথোপকথন হয় না বললেই চলে। উদ্যোগপতিদের সুবিধা বেশি করে দেখা হয়।
2018 এর আই এল ও এর প্রতিবেদনে ভারত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২২ টি দেশের মধ্যে বেতন সন্তুষ্টিতে তলার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং মঙ্গোলিয়ার উপরে।
লকডাউনের সময় মজুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে রিম্পাদের বাড়তি সুবিধা নেই। আগাম টাকা দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও নেই। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের ও পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে কাজের দরকার সেটাও হাতে নেই। অভাবে দুচোখ অন্ধকার দেখা ছাড়া আর হাহাকার করা ছাড়া রিম্পাদের কিচ্ছু করার নেই।
গোবড়গাড়া,হরিহরপাড়া,মুর্শিদাবাদ
No comments:
Post a Comment