দুলালী চিত্রকরের লকডাউন যাপন
লকডাউনের মধ্যেই করোনা নিয়ে অনেক গান লিখেছেন মহিলা কবিয়াল দুলালী চিত্রকর । কিন্তু শোনার লোক কই! দুলালী বলেন,"আমরা কবিয়ালরা সমাজকে সচেতন করতে পারি কবিগানের মধ্যে দিয়ে! সরকার আমার মত এক মহিলা কবিয়ালকে কাজেই লাগালো না! গ্রামে গ্রামে গিয়ে মাইকে করোনা সচেতনতার গান করতে বললে আমি অবশ্যই যেতাম। নিয়ম মেনেই যেতাম।পুলিশ লাঠি দিয়ে যা পারছেনা আমি গান গেয়ে তা করে দেখাতাম।"
তিরিশ বছরের কবিয়াল জীবন দুলালীর। ত্রিশ দিনও বসে থাকার অভিজ্ঞতা নেই। সরাসরি কলকাতায় ফোন করে দিল খোদ দপ্তরেই। জানতে চাইল শিল্পীদের বাঁচার কি উপায়! জবাব এল "আমরা ভাতা দিয়েছি! আগে তো কেউ কিছুই দিত না আপনাদের!" কবিগানের দাপুটে লোকশিল্পী দুলালী চিত্রকর লকডাউনে নিজেদের অবস্থার বর্ণনা করতে গিয়ে বেশ হতাশ । ফুরিয়ে আসছে রেশনে পাওয়া পাঁচ কেজি চাল। শিল্পীভাতার হাজার টাকা কবেই শেষ। মুখ লুকিয়ে ত্রান নিতে যাওয়ার সাহস নেই। এতবড় শিল্পী হাত পেতে খাবার চাইতে এসেছে! এই লজ্জায় দুলালী বাড়ির কাউকে যেতে দেয়নি। দশ জনের সংসারে এবার মাস পেরিয়ে অভাব উঁকি দিচ্ছে। শেষ গান গাইতে যাওয়া চৈত্র মাসে বর্ধমান গলসী পীড়পাড়ায়। তারপর বাইশটা গানের আসর একে একে আসর বাতিল হল। মোট ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি। আগাম বায়না নেওয়া গানের আসরের টাকাও ফিরিয়ে দিতে হবে। লকডাউনে সব অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। দুলালী ঘরে বসে মানসিক পীড়ায় দিন কাটাচ্ছেন।
তিরিশ বছরের কবিয়াল জীবন দুলালীর। ত্রিশ দিনও বসে থাকার অভিজ্ঞতা নেই। সরাসরি কলকাতায় ফোন করে দিল খোদ দপ্তরেই। জানতে চাইল শিল্পীদের বাঁচার কি উপায়! জবাব এল "আমরা ভাতা দিয়েছি! আগে তো কেউ কিছুই দিত না আপনাদের!" কবিগানের দাপুটে লোকশিল্পী দুলালী চিত্রকর লকডাউনে নিজেদের অবস্থার বর্ণনা করতে গিয়ে বেশ হতাশ । ফুরিয়ে আসছে রেশনে পাওয়া পাঁচ কেজি চাল। শিল্পীভাতার হাজার টাকা কবেই শেষ। মুখ লুকিয়ে ত্রান নিতে যাওয়ার সাহস নেই। এতবড় শিল্পী হাত পেতে খাবার চাইতে এসেছে! এই লজ্জায় দুলালী বাড়ির কাউকে যেতে দেয়নি। দশ জনের সংসারে এবার মাস পেরিয়ে অভাব উঁকি দিচ্ছে। শেষ গান গাইতে যাওয়া চৈত্র মাসে বর্ধমান গলসী পীড়পাড়ায়। তারপর বাইশটা গানের আসর একে একে আসর বাতিল হল। মোট ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি। আগাম বায়না নেওয়া গানের আসরের টাকাও ফিরিয়ে দিতে হবে। লকডাউনে সব অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। দুলালী ঘরে বসে মানসিক পীড়ায় দিন কাটাচ্ছেন।
পটুয়াদের পেট চলে গান গেয়ে ও মূর্তিনির্মাণ করে। এখন পট দেখার লোক নেই। ঠাকুর কেনার মানুষ নেই। লকডাউনে ঘরে বসে অনাহারের সঙ্গে লড়াই। আঠান্ন বছরের লড়াকু দুলালী ভেঙে পড়ে বলে, "এমন দিন কখনও আসবে ভাবিনি, পেটের ভাতের চিন্তা এভাবে করতে হবে!" জীবনে সব লড়াইয়ে দুলালী দাপটের সঙ্গে এগিয়েছে। এমনকি পৈতৃক সম্পত্তিও আট বছর ধরে উদ্ধার করেই ছেড়েছে! যদিও গর্ব করে জেলার বিখ্যাত মহিলা কবিয়াল দুলালী বলে, "সারা ভারতে সবচেয়ে সৎ এই চিত্রকরেরা। এদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই ইতিহাসে। খেটে খাওয়া জীবন চিত্রকরদের। আজ সেই সমাজটাই ভেঙে পড়েছে।" অভাব,অনটনের সঙ্গে লড়াই জারি ছিল পটুয়াদের। এই লকডাউনে মনের জোর অনেকটাই কমেছে দুলালীদের সঙ্গে থাকা পনেরোটি মনসা মঙ্গল,বাউল,কবিগান শিল্পী পরিবারের।
করোনা নিয়ে অনেক গান লিখেছেন দুলালী। কিন্তু শোনার লোক কই! দুলালী বলে,"আমরা কবিয়ালরা সমাজকে সচেতন করতে পারি কবিগানের মধ্যে দিয়ে! সরকার আমার মত এক মহিলা কবিয়ালকে কাজেই লাগালো না! গ্রামে গ্রামে আমাকে মাইকে করোনা সচেতনতার গান করতে বললে আমি যেতাম। পুলিশ লাঠি দিয়ে যা পারছেনা আমি গান গেয়ে তা করে দেখাতাম।"
আত্মবিশ্বাসী দুলালী বলে, "বন্ধন থেকে লোনের টাকা নিতে আসছে দিদি!লুকিয়ে ঘরে বসে থাকি ! ভাবতে পারেন! গরু,ছাগল কিনেছিলাম লোন করে। সেগুলোই নিয়ে আর এক সংসার। ওদেরকেও দেখতে হয়! অভাবে এরাও ভুগছে আমাদের মতই!"
"শিল্পীদের সম্মান আদায় করে নিতে চলে গেল জীবনের সিংহভাগ। এবারে পেটের জন্য নতুন লড়াই শুরু। লকডাউন আমাদের খুব সম্মানের মুখে ফেলে দিল। । পেটে খিদের আগুন কি আর ভাইরাসের সতর্কতা বোঝে বলুন !"- মাথার উপর সার দেওয়া পুরষ্কারের সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করে বলেন দুলালী চিত্রকর।
গণকর,মির্জাপুর,মুর্শিদাবাদ
গণকর,মির্জাপুর,মুর্শিদাবাদ
No comments:
Post a Comment